কোন দেশ বা জাতীর সভ্যতার মাপকাঠি হচ্ছে সে দেশের প্রতিদিনের জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য চর্চা। জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প সাহিত্য লেখাপড়ার চর্চার নির্ভর করে মানুষের মননশীল চিন্তা-ভাবনা ও সৃষ্টিশীল ক্রিয়াকর্মের উপর।পৃথিবীর সকল দেশ ও জাতীর সভ্যতার বিকাশ ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি, উন্নতি এবং ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে যে প্রযুক্তিটির অবদান সবচেয়ে অধিক তার নাম মুদ্রণ প্রযুক্তি। সমগ্র বিশ্বে মুদ্রণ সামগ্রীর প্রয়োজনীয়তা প্রতিদিনই জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। Graphic শব্দটি মূলত গ্রীক শব্দ Graphikos শব্দ হতে উৎপত্তি যার অর্থ হলো লেখা। আরও এর বহুমুখী অর্থ দাড়ায় ড্রইং, ডিজাইন, মুদ্রণ, খোদাই করা, এচিং করা সহ গ্রাফিক আর্টস শিল্পের সাহিত্য সম্পর্কিত অন্যান্য কার্যক্রম। আধুনিক যুগে গ্রাফিক আর্টস ইন্ডাস্ট্রি বলতে যা বুঝানো হতো তা প্রায়োগিক দিক ও ক্ষেত্র ব্যাপক ও বিস্তৃত যেমন বলা যেতে পারে ডিজাইন এন্ড প্যাকেজিং, প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং, ফোল্ডিং, বাইন্ডিং, কাটিং, ক্র্রিজিং সহ বর্তমান ডিজিটাল মিডিয়া এবং প্লাটফর্মের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । যাকে আমরা বর্তমান সময়ে Communication Technology ও বলতে পারি।
১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি মোহাম্মদপুর এর সংযোগস্থলে সাত মসজিদ রোড এর পাশে ৫.৫ একর জায়গার উপর গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একমাত্র মুদ্রণ প্রযুক্তি বিষয়ক হাতে কলমে শিক্ষা দানকারী প্রতিষ্ঠান। শুরুতে মুদ্রণ শিল্পের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ করে অফসেট প্রিন্টিং ও গ্রাফিক রিপ্রোডাকশনের ওপর স্পেশালাইজড র্কোসে তিন বছর মেয়াদে ডিপ্লোমা ইন প্রিন্টিং টেকনোলজি ডিগ্রী সনদ প্রদান করা হতো। বিগত ২০০১ সাল হতে প্রতিষ্ঠানটি হতে চার বছর মেয়াদি প্রিন্টিং ও গ্রাফিক প্রোডাকশন বিভাগে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ আধুনিক কারিকুলামে শিক্ষা প্রদান করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে তিনটি টেকনোলজি বিদ্যমান গ্রাফিক ডিজাইন, প্রিন্টিং ও কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি। গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর পরিচালিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান হতে ডিপ্লোমা সম্পন্নকারী ছাত্র/ছাত্রীরা বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হতে সনদ লাভ করে থাকে। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে লেখাপড়ার খরচ অত্যন্ত স্বল্প এবং ছাত্রছাত্রীরা তারা তাদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নিতে পারে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্র/ছাত্রীরা পার্ট টাইম জব, আউটসোর্সিং করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে গ্রাফিক আর্টস হতে স্নাতক সম্পূর্ণ করা ছাত্র/ছাত্রীদের জব ইম্পোলাইটির হার ৯৫% গ্রাফিক আর্টস হতে গ্রাজুয়েট সম্পূর্ণ কারীরা দেশে ও বিদেশে অত্যন্ত সুনামের ও দক্ষতার সহিত লেখাপড়া সহ অন্যান্য তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট আধুনিকায়নের কাজ চলমান রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের সেমিস্টার ভিত্তিক ফলাফলের ৭০% ছাত্রদের ও ১০০% ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান করা হয়।